সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্মদিন আজ

অনলাইন ডেস্ক: আজ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫৩তম জন্মদিন। ১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে অবরুদ্ধ ঢাকায় জন্ম গ্রহণ করেছিলেন তিনি। স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয়ের পর তার নাম ‘জয়’ রাখেন নানা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

মেধা ও তারুণ্যের প্রতীক জয় বাংলাদেশের খ্যাতনামা পরমাণুবিজ্ঞানী প্রয়াত ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়া ও বঙ্গবন্ধুকন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রথম সন্তান। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকদের হাতে বঙ্গবন্ধু সপরিবারের নিহত হওয়ার সময় বাবা এমএ ওয়াজেদ মিয়া ও মা শেখ হাসিনার সঙ্গে জার্মানিতে ছিলেন সজিব ওয়াজেদ জয়।

১৯৭৫ পরবর্তী সময়ে লন্ডন হয়ে মা শেখ হাসিনার সঙ্গে রাজনৈতিক আশ্রয়ে ভারতে চলে আসেন জয়। সেখানেই শৈশব-কৈশোর কেটেছে তার। ভারতের নৈনিতালের সেন্ট জোসেফ কলেজে লেখাপড়ার পর উচ্চতর পড়াশোনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস অ্যাট আর্লিংটন থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক শেষ করেন জয়। পরে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোকপ্রশাসন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। বর্তমানে স্থায়ীভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ায় বাস করছেন তিনি।

‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ এর রূপকার হিসেবে খ্যাত সজীব ওয়াজেদ জয়ের উদ্যোগেই ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ধারণাটি যুক্ত হয়েছিল। দেশের মানুষ এই ধারণা ব্যাপকভাবে গ্রহণ করে এবং সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনে। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার গঠনের পর বিগত তিন মেয়াদে মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশে থেকে দেশে তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন সচিব ওয়াজেদ জয়।

লেখাপড়া করা অবস্থায় রাজনীতির প্রতি অনুরক্ত থাকলেও জয় সক্রিয় রাজনীতিতে নাম লেখান ২০১০ সালে। ওই বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিতৃভূমি রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্য পদ দেয়া হয় তাকে, যার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি রাজনীতিতে আসেন।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনে দলের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় যোগ দিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ ও দেশের বিভিন্ন এলাকা সফর করেন তিনি। যা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মাঝেও বেশ ভালো প্রভাব সৃষ্টি করে।

২০১৬ সালে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদে দায়িত্বশীল পদপ্রাপ্তি নিয়ে গুঞ্জন ওঠে। নেতাকর্মীরা তাকে দায়িত্বশীল পদে দেখতে চেয়ে দাবিও তোলেন। কিন্তু তখন দলের সরাসরি পদের প্রতি অনীহা প্রকাশ করেন তিনি।

২০১৪ সালের ১৭ নভেম্বর অবৈতনিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা পদে নিয়োগ দেয়া হয় সচিব ওয়াজেদ জয়কে। ২০১৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে বিজয়ের মাধ্যমে টানা তৃতীয়বার সরকার গঠনের পর তাকে একই পদে নিয়োগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ২০০৭ সালে ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম কর্তৃক ‘গ্লোবাল লিডার অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ নির্বাচিত হন জয়।

গত দেড় দশকে বাংলাদেশে যে তথ্য-প্রযুক্তির বিপ্লব ঘটেছে, তার নেপথ্য নায়ক হিসেবে উচ্চারিত হচ্ছে তথ্য-প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ সজীব ওয়াজেদ জয়ের নাম। দলীয় কর্মকাণ্ডের বাইরে থেকে তথ্য-প্রযুক্তি, রাজনীতি, আর্থসামাজিক ও শিক্ষা বিষয়ক নানা কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন তিনি। এর মাধ্যমে দেশের তরুণদের তথ্য-প্রযুক্তির বিকাশ, প্রযুক্তিনির্ভর উদ্যোক্তা তৈরির ওপর জোর দিচ্ছেন তিনি। ইতোমধ্যে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশের’ স্থপতি হিসেবে তার নামডাক ছড়িয়ে পড়েছে।

দেশের আইসিটি খাত সংশ্লিষ্টদের মতে, শিক্ষাগত যোগ্যতা আর পেশাগত কাজের অভিজ্ঞতা দিয়ে আইসিটি খাতের বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছেন সজীব ওয়াজেদ জয়। ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে প্রথমে ইন্টারনেট সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছেন। পরে ইন্টারনেটভিত্তিক সেবা মানুষের হাতের নাগালে নিয়ে গেছেন তিনি। এখন তিনি তৃতীয় ধাপ হিসেবে ‘ক্যাশলেস সোসাইটির’ কথা বলছেন, যা মূলত স্মার্ট বাংলাদেশ হবে।

সজিব ওয়াজেদ জয় ২০০২ সালে ২৬ অক্টোবর মার্কিন নাগরিক ক্রিস্টিন ওভারমায়ারকে বিয়ে করেন। সোফিয়া ওয়াজেদ নামে তাদের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Shares
Verified by MonsterInsights