শিশুকে যেভাবে নতুন খাবার দিবেন

দৈনিক সকালের ডাক

শিশুর ৬ মাস বয়স পর্যন্ত শুধু বুকের দুধই যথেষ্ট। ৭ মাসে বুকের দুধের পাশাপাশি তিন বেলা বাচ্চাকে বাড়তি খাবার দিতে হবে। এই বাড়তি খাবার হতে পারে চাল, ডাল, সবজি, মাছ, মাংস ও তেল দিয়ে খিচুড়ি, ডিমের কুসুম, ফল (কলা/আপেল/পাকা পেঁপে/মৌসুমি ফল চটকে) ইত্যাদি। নতুন খাবার শুরু করার সময় সচেতন থাকতে হবে কিছু বিষয়ে।

● প্রথমে ২ বা ৩ চামচ করে খাবার একদম পিষে (দইয়ের মতো থকথকে হবে, কিন্তু স্যুপের মতো পাতলা নয়) শুরু করতে হবে। তারপর ধীরে ধীরে বাড়িয়ে প্রতি বেলা ১ কাপের চার ভাগের এক ভাগ (৬৫-৭০ মিলি) করে ৩ বেলা দিতে হবে।

● সব খাবার একবারে শুরু করতে যাবেন না। একটা একটা করে যোগ করতে হবে। যেমন চাল + ডাল, এরপর চাল + ডাল + একটা সবজি, তারপর চাল + ডাল + একটা সবজি + মুরগির মাংস—এভাবে। যেকোনো নতুন খাবার শুরু করে দুই–তিন দিন পর্যবেক্ষণ করতে হবে, পাতলা পায়খানা বা কোনো অ্যালার্জি হয় কি না।

● ৯ মাস বয়স থেকে আধা কাপ (১২৫ মিলি) ভারী খাবার ৩ বেলা ও ২ বেলা হালকা নাশতা দিতে হবে। ১ বছর বয়স থেকে ৩ বেলা ১ কাপ (২৫০ মিলি) ভারী খাবার ও ২ বেলা নাশতা।

● ১ বছর বয়স পর্যন্ত প্রথমে বুকের দুধ খাইয়ে তারপর বাড়তি খাবার খাওয়াতে হবে। এরপর এক বছর বয়স থেকে প্রথমে বাড়তি খাবার, তারপর বুকের দুধ দিতে হবে। 

● ডিমের সাদা অংশ, গরু অথবা খাসির মাংস (রেড মিট), কলিজা, চর্বিযুক্ত খাবার ১ বছর এবং গরুর দুধ ২ বছর বয়সের পর দিতে হবে।

সতর্ক থাকুন

■ বাচ্চার খাবার কখনো যেন শুধু চাল বা গমের সুজি না হয়। প্রতিদিন গাজর বা মিষ্টিকুমড়া না দিয়ে সপ্তাহে দুই–তিন দিন দেবেন।

■ বাচ্চার খাবারে ১ বছর বয়স পর্যন্ত কোনো আলাদা লবণ, চিনি বা মিছরি দেওয়া যাবে না।

■ প্রিজারভেটিভ ও রংযুক্ত খাবার, কোলাজাতীয় খাবার, ফাস্টফুড দেওয়া যাবে না।

■ টিভি, মোবাইল, কম্পিউটার দেখিয়ে কখনো বাচ্চাকে খাওয়ানো উচিত নয়।

■ বাচ্চার পেছনে খাবার নিয়ে লেগে থাকবেন না। আধা ঘণ্টার মধ্যে যতটুকু খায়, তা শেষ করে দিতে হবে। প্রতি বেলা খাবারের মধ্যে তিন–চার ঘণ্টা ব্যবধান থাকতে হবে।

ডা. শাওলী সরকার
সহকারী অধ্যাপক, নবজাতক ও শিশু–কিশোর রোগ বিশেষজ্ঞ, ঢাকা শিশু হাসপাতাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Shares