রুশ বাহিনীতে নতুন তিন লাখ সেনা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে প্রায় ২ লাখ ৮০ হাজার সেনা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ও নিরাপত্তা পর্ষদের চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ রোববার এ কথা জানিয়েছেন।

ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান ১৯ মাসে গড়িয়েছে। অজনপ্রিয় হওয়ায় আরেক দফা জাতীয়ভাবে বাধ্যতামূলক সেনা সংগ্রহের পথে হাঁটেনি দেশটি। তবে সামরিক বাহিনীতে নিয়োগে সক্রিয় প্রচারণা অব্যাহত ছিল।

মেদভেদেভ বলেন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে ২ লাখ ৮০ হাজার জন চুক্তিতে যোগ দিয়েছেন। তাঁরা রিজার্ভ, স্বেচ্ছাসেবক ও অন্যান্য বিভাগে যোগদান করেছেন।

রাশিয়ার সবচেয়ে পূর্ব দিকের দ্বীপ শাখালিন ভ্রমণের সময় মেদভেদেভ এ তথ্য দিয়েছেন বলে দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাস জানায়। আগস্টের শুরুতে তিনি জানিয়েছিলেন, চলতি বছরের শুরু থেকে ২ লাখ ৩০ হাজার নতুন সেনা নিয়োগ পেয়েছেন। তবে এএফপি সেনা নিয়োগের এই সংখ্যা আলাদাভাবে যাচাই করতে পারেনি।

ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলে গত শনিবার দিবাগত রাতে বড় ধরনের হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। তবে ইউক্রেনের বিমানবাহিনী আজ ভোরে জানিয়েছে, দক্ষিণ ওদেসা অঞ্চলে রাতের ওই হামলার সময় তারা রাশিয়ার ২২টি ড্রোন ধ্বংস করেছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে ইউক্রেনের বিমানবাহিনী লিখেছে, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে রাশিয়া দফায় দফায় হামলা চালায়। হামলায় ‘শাহেদ-১৩৬/১৩১’ ড্রোন ব্যবহার করা হয়।

ইউক্রেনের বিমানবাহিনী বলেছে, ইরানের তৈরি মোট ২৫টি শাহেদ ড্রোন দিয়ে রাশিয়া হামলা চালায়। এর মধ্যে ২২টি ড্রোন ইউক্রেন ধ্বংস করেছে।

তবে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আজ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, রোমানিয়া সীমান্তের কাছে ওদেসা অঞ্চলে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর একটি তেলের ডিপোতে ড্রোন হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী।

বিবৃতিতে বলা হয়, ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর যানগুলোতে জ্বালানি সরবরাহকারী স্থাপনাগুলোতে বেশ কিছু ড্রোন ব্যবহার করে হামলা চালায় রাশিয়ার বিমানবাহিনী। দানিউব নদীর বাঁ তীরে অবস্থিত রেনি বন্দরে এসব স্থাপনা অবস্থিত।

জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় হওয়া কৃষ্ণসাগর শস্য চুক্তি গত জুলাইয়ে ভেস্তে যায়। এই চুক্তির আওতায় কৃষ্ণসাগর দিয়ে নিরাপদে শস্যের চালান পাঠানো সম্ভব হচ্ছিল। চুক্তিটি থেকে রাশিয়া বেরিয়ে যাওয়ার পর ইউক্রেনের দক্ষিণ ওদেসা ও মাইকোলাইভ অঞ্চলে হামলা বাড়িয়েছে মস্কো।

দক্ষিণ ওদেসা ও মাইকোলাইভ অঞ্চলের বন্দরসহ অন্যান্য অবকাঠামো শস্যের চালান পাঠানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। গত মাসে রাশিয়ার অবরোধ উপেক্ষা করে ইউক্রেন থেকে কৃষ্ণসাগর দিয়ে প্রথম বেসামরিক পণ্যবাহী একটি জাহাজ তুরস্কের ইস্তাম্বুলে পৌঁছায়। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি গত শনিবার বলেছেন, আরও দুটি জাহাজ দেশটির অস্থায়ী কৃষ্ণসাগরের শস্য করিডর দিয়ে গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে গেছে।

এদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, খুব শিগগিরই তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। গত শুক্রবার এক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘শিগগিরই কয়েকটি অনুষ্ঠানে আমরা অংশ নেব। সেখানে পিপলস রিপাবলিক অব চায়নার চেয়ারম্যানের (সি চিন পিং) সঙ্গে বৈঠক হবে।’

চীনের প্রেসিডেন্ট তাঁকে বন্ধু মনে করেন জানিয়ে পুতিন বলেন, ‘আমি তাঁকে আমার বন্ধু বলতে পেরে খুশি। কারণ, তিনি এমন একজন ব্যক্তি, যিনি ব্যক্তিগতভাবে রাশিয়া ও চীনের সম্পর্কোন্নয়নে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনেক কাজ করছেন।’ এর আগে বলা হয়েছিল, অক্টোবরে চীনে অনুষ্ঠেয় বেল্ট অ্যান্ড রোড ফোরামে অংশ নিতে পারেন পুতিন।

সমালোচনার মুখে চলতি বছরের নোবেল পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে অংশ নিতে রাশিয়া ও বেলারুশের রাষ্ট্রদূতদের আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে নোবেল ফাউন্ডেশন। গতকাল শনিবার এ কথা জানানো হয়েছে।

প্রতিবছর বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ এই পুরস্কার বিতরণে সুইডেনের স্টকহোমে জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

গত বছর ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রাশিয়া ও বেলারুশের রাষ্ট্রদূতদের আমন্ত্রণ না জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ইরানে বিক্ষোভকারীদের ওপর দমন–পীড়নের কারণে দেশটির রাষ্ট্রদূতের ক্ষেত্রেও একই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

তবে গত ৩১ আগস্ট নোবেল ফাউন্ডেশন জানায়, তারা আগের মতো নোবেল পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সব দেশের দূতদের আমন্ত্রণ জানানোর রেওয়াজে ফিরে যাবে। তাদের এই ঘোষণার পরপরই শুরু হয় তীব্র প্রতিক্রিয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Shares
Verified by MonsterInsights