ভোলা-বরিশাল সেতু নির্মাণে আগ্রহী জাপান

ভোলা প্রতিনিধি
দেশের একমাত্র দ্বীপ জেলা ভোলাকে মূল ভূখণ্ডে যুক্ত করতে সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। সেতুটি নির্মাণে বাংলাদেশ ব্রিজ অথোরিটি (বিবিএ) এর আওতায় ২০১৭ সালে সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু হয়েছিল। এবং শেষ হয়েছিল ২০১৯ সালে। যাচাই-বাচাই শেষে সেতুটির চুড়ান্ত ডিজাইনের পর প্রায় ১০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ভোলা-বরিশাল সেতু নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৯ হাজার ৯২২ কোটি টাকা। এই সেতুটি কালাবদর ও তেতুলিয়া নদীর উপর নির্মাণ করা হবে। তেঁতুলিয়া ও কালাবদর দিয়ে বরিশাল থেকে ভোলার দূরত্ব সবচেয়ে কম। এ কারণে নদী দুটির ওপরই সেতু নির্মাণ করা হবে।

এদিকে পাব্লিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) এর আওতায় সেতুটি নির্মাণে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের অন্যতম বন্ধু রাষ্ট্র জাপানের মিগাওয়া (Miyagawa) কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। গত বুধবার অর্থনীতি বিষয়ক কমিটি সভাতে জাপানের এই প্রস্তাবটি রাখা হয়েছিল।

জাপানের প্রস্তাবে বলা হয়েছে যে, প্রায় ১০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ভোলা-বরিশাল সেতু প্রকল্পের ৪.৬৮ কিলোমিটার সেতুর সাথে ৪.৯ কিলোমিটার এলিভেটেড রোড নির্মাণ করবে মিগাওয়া কনস্ট্রাকশন লিমিটেড।

তাদের প্রস্তাবের ভিত্তিতে বাংলাদেশ কি ভোলা-বরিশাল সেতু প্রকল্পের কাজ জাপানের কোম্পানিকে দিবে কিনা এমনটা জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী এএইচএম মোস্তফা কামাল বলেন, “আমাদের এই ক্যাবিনেট সভাতে বিবিএ এখনো জাপানের কোম্পানিকে সেতু প্রকল্পের কাজটি অনুমোদন দেয় নি কিংবা তাদের প্রস্তাবকে বাতিল করেও দেয় নি। তবে আমরা তাদের কিছু পয়েন্ট পরিষ্কার করার প্রস্তাব পাঠিয়েছি, আশা করি আগামী সভাতে সেতু প্রকল্পের কাজটি জাপানের কোম্পানি মিগাওয়া কনস্ট্রাকশন লিমিটেডকে অনুমোদন দেওয়া হবে।”

এছাড়া পরবর্তী সভার আগে জাপানের মিগাওয়া কোম্পানিকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে আবার প্রস্তাব জমা দিতে বলা হয়েছে। প্রকল্পের কাজ জাপানকে দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মিগাওয়া কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের প্রস্তাব তদন্ত করবে। যদি জাপানি কর্তৃপক্ষ অগ্রসর হয়, তবে বাংলাদেশ সরকার মিগাওয়া কনস্ট্রাকশন লিমিটেডকে প্রকল্পে জড়িত করার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।

জাপানকে কাজ দেওয়া হলে আশা করা যায় আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে স্বপ্নের ভোলা-বরিশাল সেতুটি সত্যিকার রুপে বাস্তবায়িত হবে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে এই সেতুটি দুটি জেলার মধ্যে যাতায়াতের সময়কে হ্রাস করবে। এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত ফলে ভোলাবাসী ভোলা-বরিশাল সেতুর সুফল ভোগ করবে। ভোলা আর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ থাকবে না। ভোলা শিল্পায়নের উপযুক্ত হবে কারণ এখানে পর্যাপ্ত গ্যাস আছে। তাছাড়া সেতুটি নির্মাণ হলে ভোলার গ্যাস পাইপলাইনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Shares