ভোমরা স্থল বন্দর দিয়ে এক বছরে রাজস্ব আদায় প্রায় ১০ কোটি টাকা

এসএম শহীদুল ইসলাম, সাতক্ষীরা: গত এক বছরে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থল বন্দর দিয়ে তিন লাখ ৬১ হাজার ৯৩৭জন যাত্রী পারাপার করেছে। আর এই যাত্রী পারাপারে সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছে ৯ কোটি ৮০ লক্ষ ৫৭ হাজার টাকা।

ভোমরা স্থলবন্দর সূত্র জানায়, ভারতের বাণিজ্য শহর কোলকাতার সাথে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার ভোমরার দূরত্ব কম হওয়ায় যাত্রীরা ভোমরা-ঘোজাডাঙ্গা স্থল বন্দর দিয়ে যাতায়াত করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। ভ্রমন, চিকিৎসা, ব্যবসা, শিক্ষাসহ স্বজনদের সাথে দেখা করতে ভারত ভ্রমণে যাচ্ছেন অনেকে। গত ২০২২-২৩ অর্থ বছরে এ বন্দর দিয়ে এক লাখ ৯৮ হাজার ২৭৫জন যাত্রী বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করেছে। একই সময়ে ভারতে থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে এক লাখ ৬৩ হাজার ৬৬২ জন যাত্রী। এই অর্থ বছরে ভ্রমণ খাত থেকে সরকারের রাজস্ব আসে ৯ কোটি ৮০ লাখ ৫৭ হাজার টাকা।

ভোমরা স্থলবন্দর শুল্ক স্টেশন থেকে জানা যায়, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ভোমরা স্থল বন্দর দিয়ে তিন লাখ ৬১ হাজার ৯৩৭জন যাত্রী পারাপার করেছে। এরমধ্যে এক লাখ ৯৮ হাজার ২৭৫জন যাত্রী বাংলাদেশ থেকে ভারতে এবং এক লাখ ৬৩ হাজার ৬৬২জন যাত্রী ভারতে থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।

অফিস থেকে আরও জানা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করে ২ লাখ ৫ হাজার ৩৭৬জন যাত্রী। একই অর্থ বছরে ভারত থেকে বাংলাদেশ আসে ১ লক্ষ ৫৮ হাজার ৭৫২ জন যাত্রী। এ অর্থ বছরে ভ্রমণ খাত থেকে সরকারের রাজস্ব আসে ১০ কোটি ২৬ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। পরবর্তি ২০১৯-২০ অর্থ বছরে বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করে ১ লক্ষ ৫৫ হাজার ৯৩৫জন যাত্রী। ভারত থেকে বাংলাদেশ আসে ১ লক্ষ ৩ হাজার ৮৬৯জন যাত্রী। করোনা অতিমারির কারণে এ অর্থ বছরের ১৩ মার্চ ভারত সরকার ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করায় সরকারের রাজস্ব কমে যায় প্রায় ৩ কোটি টাকা। এ অর্থ বছরে সরকার ৭ কোটি ৭৯ লাখ ৬৭ হাজার ৫০০ টাকা রাজস্ব আদায় করতে সক্ষম হয়। করোনার প্রভাবে গত ২০২০-২১ অর্থ বছরে ভোমরা স্থলবন্দরে যাত্রী যাতায়াত সম্পূর্ণ বন্ধ থাকায় কোন রাজস্ব আদায় করতে পারেনি সরকার। তবে, এ সময়ে ভারতে আটকে থাকা ৬৭৩ জন যাত্রীকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হয়। ২০২১-২২ অর্থ বছরে এই স্থল বন্দর দিয়ে ৪৬ হাজার ৫০০ জন যাত্রী গমনাগমন করে। এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করে ২৪ হাজার ৩৭৯জন যাত্রী এবং ভারত থেকে বাংলাদেশ আসে ২২ হাজার ১২১জন যাত্রী। এ অর্থ বছরে ভ্রমণ খাত থেকে সরকারের রাজস্ব আসে এক কোটি ২১ লাখ ৮৯ হাজার ৫০০ টাকা।
J
অফিস থেকে আরও জানা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ভ্রমণ কর ১০০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা ১ জুলাই শনিবার থেকে কার্যকর করা হয়েছে। এছাড়াও ১২ বছরের নিচের যাত্রীদের জন্য ৫০০ টাকা ভ্রমন কর নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে ৫ বছরের নিচের, অন্ধ, ক্যান্সার আক্রান্ত ও পঙ্গু যাত্রীদের ক্ষেত্রে কোন ভ্রমন করের প্রয়োজন হবে না। পূর্বে ৫০০ টাকা ভ্রমণকর পরিশোধ করে যাত্রীরা আসা-যাওয়া করতে পারতেন।

ভোমরা চেকপোস্ট পুলিশ ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসআই মো: মাজরিহা হুসাইন বলেন, যাত্রীদের সুবিধার্থে ভোমরা পুলিশ ইমিগ্রেশনের ৬টি ডেস্কে নিয়মিত কাজ করছেন অফিসাররা। এর মধ্য ৩টি বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশের যাত্রী এবং ৩টি ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশের যাত্রীদের জন্য ব্যবহৃত হয়। সরেজমিনে দেখা যায় যে, সাতক্ষীরা জেলার ভোমরা সীমান্তে অবস্থিত ভোমরা পুলিশ ইমিগ্রেশনে একটি আধুনিক ভবনে যাত্রীদের ভারতে গমনাগমন সংক্রান্ত কার্যাবলী সম্পাদন করা হয়। সেখানে উপস্থিত দেশী-বিদেশী যাত্রীগণ পুলিশের আন্তরিক ব্যবহারসহ দ্রুত ইমিগ্রেশন সেবার প্রশংসা করেন।

ভোমরা স্থলবন্দর শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা ইফতেখার হোসেন বলেন, সাতক্ষীরা-ভোমরা রোডের সংস্কার ও করোণার বন্ধের পর পুনরায় এই বন্দর চালু হওয়ায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক যাত্রী পারাপার হচ্ছে। যার ফলে সরকারের প্রচুর রাজস্ব আদায় হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ১জুলাই থেকে ভ্রমণ কর ১০০০টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে ১২ বছরের নিচের যাত্রীদের জন্য ৫০০টাকা এবং ৫ বছরের নিচের, অন্ধ, ক্যান্সার আক্রান্ত ও পঙ্গু যাত্রীদের ক্ষেত্রে কোন ভ্রমন করের প্রয়োজন হবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Shares
Verified by MonsterInsights