বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিনের জীবনী

সকালের ডাক ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা পুরুষ, বহু বিদ্যাবিশারদ, গ্রন্থকার, রাজনৈতিক তাত্ত্বিক, বিজ্ঞানী, কূটনীতিক বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন ১৭০৬ সালের ১৭ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। বিজ্ঞানী হিসেবে আমেরিকার আলোকিত যুগের ও পদার্থ বিজ্ঞানের ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই ব্যক্তিত্ব বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্ট আবিষ্কার ও তত্ত্বের জন্য স্মরণীয় হয়ে আছেন।

১৭৪৭ সালে তাঁর প্রচারিত ধনাত্মক ও ঋণাত্মক বিদ্যুৎ মতবাদ উচ্চ প্রশংসিত হয়। ফ্রাঙ্কলিন স্টাভ, লাইটনিং রড তাঁর আবিষ্কার। ১৭৫১ সালে তিনি রাজনীতিতে যোগ দেন। আমেরিকার স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন তিনি।

ফ্রাঙ্কলিনের বাবার নাম জেসিয়া ফ্রাঙ্কলিন। বোস্টন ল্যাটিন স্কুলে পড়াশোনা করেন বেঞ্জামিন। তবে স্নাতক শেষ করেননি। অবশ্য প্রচুর পড়তেন। মাত্র ১৫ বছর বয়সে তিনি দ্য নিউ ইংল্যান্ড কারেন্ট নামে একটি সাময়িকী প্রকাশ করেন।

১৭৮৫-১৭৮৮ সাল পর্যন্ত তিনি পেনসিলভেনিয়ার গভর্নর ছিলেন। জীবনের শেষ দিকে তিনি তাঁর দাসদের মুক্ত করে দেন। আমেরিকার মুদ্রা, শহর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন সময়ে তাঁর নাম সচিত্র মুদ্রিত হয়েছে। বিজ্ঞান, বিশেষ করে, পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে তাঁর অবদানগুলো বেশ উল্লেখযোগ্য।

যেমন, বজ্রনিরোধক দণ্ড, বাইফোকাল লেন্স, ফ্রাঙ্কলিনের চুলা, অডোমিটার, ফ্রাঙ্কলিন হারমোনিকা ইত্যাদি। ১৭৩০ সালে ডবেরা নামে এক বিদুষী নারীকে বিয়ে করেন। তিনি ১৭৩১ সালে সালে ফিলাডেলফিয়া পাবলিক লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৭৩২ সালে পুওর রিচার্ড আলামানক চালু করেন। ১৭৯০ সালের ১৭ এপ্রিল তিনি মারা যান। বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিনের বিদ্যুৎ আবিষ্কার নিয়ে একটি মজার গল্প আছে।

আকাশের চমকানো বিদ্যুৎ আর আমাদের ঘরে উৎপাদিত বিদ্যুৎ যে একই জিনিস তা জানতেন না তখনকার বিজ্ঞানীরা। বেঞ্জামিন প্রমাণ করে দেখান যে, আকাশের চমকানো বিদ্যুৎ আর ঘরে তৈরি করা বিদ্যুৎ একই জিনিস।

১৭৫২ সালের ১৫ জুন তিনি প্রচণ্ড এক ঝড়ো বাতাসে বিপজ্জনক এক পরীক্ষা করে বসেছিলেন। সে দিন রাতে প্রবল বাতাসের সঙ্গে সঙ্গে চলছিল বৃষ্টি। তিনি সে দিন উড়িয়ে দিলেন রেশমি কাপড়ের তৈরি এক ঘুড়ি। ঘুড়ির যে সুতা সেখানেও ব্যবহার করলেন রেশমি সুতা। সুতার শেষ মাথায় মানে হাতের কাছে বেঁধে দিলেন ধাতুর তৈরি এক চাবি।

আর চাবিটা ছিল এক দম তাঁর হাতের কাছে। রেশমি সুতা নেওয়ার কারণ, রেশমি কাপড় ইলেকট্রন পরিবহন করতে পারে ভালো। রেশমি কাপড়ে কাচের কাঠি ঘষে নিলে তা ছোট ছোট কাগজ টুকরো বা কাঠের টুকরোকে আকর্ষণ করে তা প্রচলিত ছিল অনেক আগেই। তার ওপর ছিল বৃষ্টির জলে ভিজে পরিবহন ক্ষমতা গেল বেড়ে। ফ্রাঙ্কলিন জানতেন না কত বড় বিপদের কাজ করছেন তিনি।

আকাশে বিদ্যুৎ চমকানোর সঙ্গে সঙ্গে সে বিদ্যুৎ ভেজা সুতো বেয়ে নেমে এল চাবির মাঝে। চাবির মধ্যে বয়ে গেল প্রবল বিদ্যুতের ঝলক। বেঞ্জামিনের ভাগ্য যে কী পরিমাণ ভালো ছিল ভাবতেই অবাক লাগে। কারণ এ কাজে দু’জন মারা গিয়েছিল। আকাশে যে কী পরিমাণ বিদ্যুৎ থাকে! প্রায় আড়াইশো বছর আগে পরীক্ষাটি করেছিলেন বিজ্ঞানী বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Shares