বাউফলে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের তান্ডবে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি, ফসল ও ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত
স্টাফ রিপোর্টার,বাউফল : পটুয়াখালীর বাউফলে ঘূর্নিঝড় সিএাংয়ের প্রভাবে ব্যাপক ক্ষয়- ক্ষতি হয়েছে। ভেঙে গেছে অর্ধ শতাধিক ঘর বাড়ি। বসত ঘর ভেঙে যাওয়ায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কষ্টে রাত্রি যাপন করছেন ভুক্তভুগীরা।
সোমবার (২৪ অক্টোবর) সকাল থেকেই ঝড়ো বাতাস ও মুষল ধারে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। উপকূলীয় নদ নদী গুলোতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তেতুলিয়া নদী বেষ্টিত চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন প্লাবিত হয়ে গেছে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে। উপজেলার চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নে ( নং ৯ ওয়ার্ড) চরওয়াডেল গ্রামের বাসিন্দা মোঃ ইব্রাহিম ফরাজি ও মোঃ জুলহাস চৌকিদার, মোঃ সবুজ জমাদ্দারের বসত ঘরসহ বিধ্বস্ত হয়ে প্রায় দুই লক্ষ টাকার সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সরজমিনে দেখা গেছে মোঃজুলহাস চৌকিদারের বসতঘরের উপরে প্রায় (৪০ফুট) লম্বা চাম্বুল গাছ পরে আছে । ঘরটি মাঝখানে বিশালাকার এ গাছটি পড়ে দেবে গেছে টিনের চালা। জুলহাস চৌকিদার বলেন হারাদিন (সারাদিন) পানিতে তলাইয়া আছিলে (তলিয়ে ছিল) ঘরের দোনে নামতে পারি নাই (ঘর থেকে বাইরে নামতে পারিনি) সারাদিন না খেয়ে কাটিয়েছি। সন্ধ্যা হওয়ার পরেই আনুমানিক সাড়ে ৭ টায় প্রচন্ড বাতাসের কারণে গাছ পড়ে দুর্ঘটনা ঘটে ,আল্লাহর অশেষ রহমত আমাদের কোনো ক্ষয়-ক্ষতি হয় নাই । সারারাত ছেলে ও ছেলের বউ পাশের বাসায় কোনো রকম রাত্রি যাপন করেন। আমরা ঘর ভিটে ছেড়ে যাইনি। জুলহাস চৌকিদারের স্ত্রী রোসানা বেগম (৬৫) কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, বন্যায় আমার ঘর ভেঙ্গে গেছে আমাদের থাকার মতো কোনো যায়গা নেই ।সরকার যদি একটু সহযোগিতা করতো তাহলে ছেলে মেয়ে নিয়ে থাকতে পারতাম।
অপর দিকে সবুজ জমাদ্দার ও ইব্রাহিম ফরাজির ঘরের উপরে গাছ ভেঙ্গে পড়ে সমস্ত টিন গুলো ছিদ্র হয়ে গেছে। এ বিষয়ে ওয়ার্ড মেম্বার মোঃ ছালাম হাওলাদার বলেন জুলহাস চৌকিদারের পরিবারে ৮ জন সদস্য ,একমাত্র বসত ঘরটি ভেঙে যাওয়ায় অনেক কষ্টে কাটছে দিন রাত।
এছাড়াও নদীবেষ্টিত চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের রায় সাহেব গ্রামের শাহ আলম রাঢ়ী, আইয়ুব আলী সিকদার, ফজলে করিম খান, চরওয়াডেল গ্রামের মো. জসিম চৌকিদার, মোসা. ফারজানা বেগম, চর ব্যারেট গ্রামের মো. হেলাল হাওলাদার, দক্ষিণ চর ওয়ার্ডের গ্রামের ৫নং ওয়ার্ডের ইব্রাহিম ফরাজির ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে।
এদিকে পানির তোড়ে বাউফল পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের অটোচালক মো. হারুনের ঘরের ভিটে মাটি ও যাতায়াতের সড়কের মাটি চলে গেছে।
চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এনামুল হক আলকাচ মোল্লা বলেন, ‘ঝড়ো বাতাসে গাছ পড়ে ও পানির তোড়ে ইউনিয়নে ৩০-৪০টি ঘর বিধস্ত হয়েছে। অস্বাভাবিক পানিতে দুই শতাধিক পুকুর ও মাছের ঘেরের মাছ ভেসে গেছে।গাছ পরে বিদ্যুৎ লাইন সহ রাস্তা ঘাট ছিড়ে গেছে। এছাড়াও চরওয়াডেল খানকা এলাকার পাকা সড়ক এবং চররায় সাহেব, চর ব্যারেট ও চরনিমদী এলাকার মাটির সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।’