নালিতাবাড়ীতে আরো ৬ নারী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পেলো

আমিরুল ইসলাম, শেরপুর প্রতিনিধি : শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সোহাগপুর বিধবাপল্লীর আরো ৬ নারী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে (বীরাঙ্গনা) স্বীকৃতি পেলেন। এর আগে গ্রামটির ১৪ জন নারী স্বীকৃতি পেয়েছেন। এনিয়ে ওই গ্রামের ৩০ জন নারী মুক্তিযোদ্ধা (বীরাঙ্গনা) স্বীকৃতি পেলেন। গত ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত ভিন্ন ভিন্ন গেজেটে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

জানাগেছে, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের ৮৬ তম সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ২৬ অক্টোবর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সারাদেশের ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে নারী মুক্তিযোদ্ধা (বীরাঙ্গনা) স্বীকৃতির গেজেট প্রকাশ করে। এতে নালিতাবাড়ীর ৬ জন হলেন সোহাগপুর গ্রামের ঝর্ণা দিও, সমিলা রাকসাম, মালতি রাকসাম, মোছাঃ হাজেরা, মোছাঃ লাকজান ও কেরেঙ্গাপাড়ার মোছাঃ ছাহেরা খাতুন।

উল্লেখ্য ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ২৫ জুলাই নালিতাবাড়ী উপজেলার কাকরকান্দি ইউনিয়নের সোহাগপুর গ্রামে নৃশংস গণহত্যা চালায় পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার আলবদররা। সেদিন তাদের দুইঘণ্টার তাণ্ডবে ১৮৭ জন পুরুষ গুলিতে নিহত হন। গ্রামের সকল পুরুষদেরকে হত্যা করা হয়। সেই থেকে গ্রামটি বিধবাপল্লী নামে পরিচিত লাভ করে।

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের জঘন্যতম এবং নৃশংসতম ওই গণহত্যায় গ্রামের ৬২ জন মহিলা বিধবা হন এবং তাঁদের অনেককেই শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়। স্বাধীনতা পরবর্তী ওই গ্রামের ৫৬ জন বিধবা বেঁচেছিলেন। বর্তমানে তাঁদের মধ্যে বেঁচে আছেন ২২ জন বিধবা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতিমধ্যেই ২৯ জন বিধবার প্রত্যেকের জন্য ১১ লাখ টাকা করে মোট ৩ কোটি ১৯ লাখ টাকা ব্যায়ে ২৯ টি পাকা বাড়ি করে দিয়েছেন। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় সোহাগপুরে “বীর কন্যা প্রাথমিক বিদ্যালয়” প্রতিষ্ঠা করা হয়।

শহীদদের স্মরণে গ্রামটিতে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে “শহীদ মুক্তিযোদ্ধা কলেজ”। বিধবাপল্লীর রাস্তাটিও পাকা করা হয়েছে। শহীদদের স্মরণে স্মৃতিসৌধ “সৌরজায়া” স্থাপন করা হয়েছে। দীর্ঘ ৫০ বছর পর তাদের জন্য জেলার পুলিশ সদস্যরা তাঁদের বেতনের টাকায় বিধবাদের জমি কিনে দিয়েছেন ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Shares
Verified by MonsterInsights