তামাক কোম্পানিকে সহযোগিতা না করার নীতি গ্রহণ করেছে স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক : জনস্বাস্থ্য রক্ষার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশান অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি) আর্টিকেল ৫.৩ এর আলোকে তামাক কোম্পানিকে সহযোগিতা না করার নীতি গ্রহণ করেছে। যা অদ্য ২০ জুলাই ২০২৩ থেকে কার্যকর হবে।

উল্লেখ্য, স্বাস্থ্য বিষয়ক চুক্তি এফসিটিসিতে প্রথম স্বাক্ষরকারী রাষ্ট্র বাংলাদেশ বিধায় এর আর্টিকেলসমূহ প্রতিপালন করা বাংলাদেশের নৈতিক দায়িত্ব। এফসিটিসি এর আর্টিকেল ৫.৩ তে উল্লেখ করা হয়েছে, “তামাক নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক বা তামাক কোম্পানির স্বার্থের চেয়ে জনস্বাস্থ্য বিষয়ক নীতিমালাসমুহকে প্রাধান্য দিতে হবে”। জনস্বাস্থ্যকে প্রাধান্য দিতে হলে সহায়ক নীতি গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া তামাক কোম্পানির প্রভাবমুক্ত রাখা জরুরি।

বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় স্টেট ইউনিভার্সিটি ইতিমধ্যেই পাবলিক হেলথ ডিপার্টমেন্টের আওতায় তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে নানা কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে। জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় আজ ১৯ জুলাই ২০২৩ সকাল ১১টায় স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট ও ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর সম্মিলিত উদ্যোগে “জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে সহায়ক নীতিগুলো সুরক্ষায় গাইডলাইন গ্রহণ” বিষয়ক একটি সংক্ষিপ্ত সভার মাধ্যমে এফসিটিসি আর্টিকেল ৫.৩ কে সমর্থন জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ডা. নওজিয়া ইয়াসমীন এই “কোড অব কনডাক্ট” সাক্ষর করেন।

উল্লেখ্য এ বিষয়ে ইতিপূর্বে জ্যেষ্ঠ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড. আবু জামিল ফয়সালের সহযোগিতায় বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট এবং ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর একটি প্রতিনিধিদল স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের সাথে সরাসরি সাক্ষাৎ করে। স্বাক্ষাৎকালে তামাক কোম্পানিগুলো জনস্বাস্থ্য বিষয়ক নীতি প্রনয়ণ ও বাস্তবায়নে কিভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে এবং উত্তরনে কি ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে সে বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এর ধরনের উদ্যোগ দেশে তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিকে আরো এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গেল । সভায় স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এর পক্ষ থেকে বলা হয় তামাকের বিরুদ্ধে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে শক্তিশালী অবস্থান। উক্ত সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলদেশ ট্রাস্ট এর হেড অব প্রোগ্রাম সৈয়দা অনন্যা রহমান এবং প্রকল্প কর্মকর্তা সামিউল হাসান সজীব এবং স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এর সহকারী রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ খোরশেদ আলম । এফসিটিসি এর ৫.৩ অনুসারে স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করবে:

· স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এর কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ তামাক কোম্পানির সঙ্গে কোন সম্পর্ক স্থাপন করবে না। তামাক কোম্পানির কাছ থেকে কোন দান-অনুদান-পুরস্কার-উপহার বা অন্য কোন আর্থিক ও কারিগরি সুবিধা-সহযোগিতা গ্রহণ, তামাক কোম্পানির ব্যবসায়িক স্বার্থ সংরক্ষণ এবং তামাক কোম্পানি লাভবান হবে বা তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হবে- এমন যে কোন কাজ থেকে বিরত থাকবেন। এছাড়া তামাক কোম্পানির সঙ্গে কোনরূপ লিখিত/অলিখিত চুক্তি করবে না।

· তামাক কোম্পানিতে কাজ করেছেন কিংবা তামাক কোম্পানির স্বার্থে কাজ করে এমন প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন, কিংবা তামাক কোম্পানির কাছ থেকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সুবিধা পেয়েছেন, এমন কোন ব্যক্তিকে স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ-এ নিয়োগ দেবে না।

· স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ-এ কর্মরত ব্যক্তি তামাক কোম্পানি বা তামাক কোম্পানির স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কোন অনুষ্ঠানে, বা তামাক কোম্পানির পক্ষে কাজ করে এমন কোন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকবেন। সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচির (সিএসআর) সহ তামাক কোম্পানির সামাজিক-সাংস্কৃতিক বা এ জাতীয় অন্যান্য অনুষ্ঠানে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Shares
Verified by MonsterInsights