জয়পুরহাটে কোরবানী সামনে রেখে দেড় লাখ পশু মজুদ

এম.এ.জলিল রানা,জয়পুরহাট প্রতিনিধি:

পবিত্র ঈদ-উল-আযহাকে সামনে রেখে জয়পুরহাটে কোরবানির জন্য প্রায় দেড়লাখ পশু মজুদ থাকলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে কেনা-বেচা তেমন জমে উঠেনি। মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা উদযাপনের লক্ষ্যে জয়পুরহাটে এক লাখ ২০ হাজার পশুর চাহিদার বিপরীতে কোরবানির জন্য ১ লাখ ৪৭ হাজার ২৮৭টি পশু মজুদ রয়েছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ দফতর সূত্র জানিয়েছে দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে মোটাতাজাকরণ কর্মসূচির আওতায় খামারিদের কাছে বর্তমানে ১ লাখ ৪৭ হাজার ২৮৭টি পশু মজুদ রয়েছে, যা দিয়ে জেলার কোরবানির চাহিদা মিটিয়ে প্রায় ৩০ হাজার পশু থাকবে অতিরিক্ত। ছোট-বড় মিলে জেলায় ১১ হাজার ৪৭৪টি পশুর খামারে বিক্রয় উপযোগী মজুদ পশুর মধ্যে গরু ও মহিষ রয়েছে ৬১ হাজার ২২৪টি। ছাগল ও ভেড়া রয়েছে ৮৬ হাজার ৬৩টি। জেলায় ছোট বড় মিলে পশুর হাট রয়েছে ২৩টি।

রিজেন্ট সাহেদকে ধরতে শ্রীমঙ্গলে অভিযান চালাচ্ছে র‍্যাব-পুলিশ
জেলা শহরের সবচেয়ে বড় পশুরহাট নতুনহাটে সর্বনিম্ন ৩০ হাজার থেকে শুরু করে উপরে ১০ লাখ টাকার গরু আমদানি হলেও বেচা-কেনা তেমন শুরু হয়নি বলে জানান হাটের ইজারাদার কালীচরণ আগরওয়ালা ও জাহিদ ইকবাল।

জানা যায়, সাধারণ মানুষ এখন অভাবকে দূরে ঠেলে দিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন গরু, ছাগলের খামার করে। স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা জাকস ফাউন্ডেশন দেশীয় পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজাকরণ কর্মসূচির আওতায় ৪৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ঋণ বিতরণ করেছে।

জেলার নতুনহাট, জামালগঞ্জ, পাঁচবিবি, দুর্গাদহ, বটতলী, ইটাখোলা, পুনট, আক্কেলপুর কোরবানির পশুরহাট সূত্রে জানা যায়, করোনা পরিস্থিতির কারণে কোরবানির পশুরহাট তেমন জমে উঠেনি তবে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট থেকে কিছু গরু ব্যবসায়ী এসে স্বল্প পরিসরে গরু কেনা শুরু করেছেন। বাজারে ১১০ থেকে ১২০ কেজি মাংস হবে এমন গরুর দাম চাওয়া হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ হাজার টাকা।

পাঁচবিবি উপজেলার মাঝিনা গ্রামের কৃষক অভিজিৎ চক্রবর্তী গরুর দাম হাঁকছেন ৬ লাখ টাকা। ইতোমধ্যে ক্রেতারা দাম করেছেন সাড়ে ৪ লাখ টাকা। গরুটির ওজন ৯শ কেজি।

করোনা পরিস্থিতির কারণে ক্রেতাসমাগম কম হওয়ায় খামারিরা চিন্তিত বলে জানান দোগাছী এলাকার জহুরুল ইসলাম। গরুর পাশাপাশি ছাগলও উঠেছে বাজারে। ১৫ থেকে ২৫ কেজি মাংস হবে এমন ছাগল ৩৫ হাজার থেকে ৪৫ হাজার পর্যন্ত দাম করতে দেখা গেছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: মাহফুজুর রহমান জানান, করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে দ্রুত সময়ে যাতে পশু কেনা করা যায় সে দিকে লক্ষ রাখার জন্য ইজারাদারদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং বড় বড় হাটগুলো চাহিদার আলোকে ছোট পরিসরে বিভিন্ন স্থানে বসানোর প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে।

গরুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য প্রাণিসম্পদ বিভাগের ভ্যাটেরিনারি সার্জনের নেতৃত্বে ৩ থেকে ৫ সদস্যের টিম সার্বক্ষণিকভাবে দায়িত্ব পালন করবে। বাজারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পশুর হাট কমিটির পক্ষ থেকে মাইকে সতর্কতামূলক প্রচার চালানোর পাশাপাশি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। এ ছাড়াও অনলাইনে যেকোনো বিষয়ে তথ্য নেয়া ও খামারির সাথেও যোগাযোগ করার সুযোগ থাকবে।

ভারতীয় গরুর বিষয়ে প্রাণিসম্পদ ওই কর্মকর্তা বলেন জয়পুরহাট জেলায় পশু ক্রয়-বিক্রয়ের যে হাটগুলো রয়েছে সেখানে কঠোর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে এবং সীমান্ত এলাকা দিয়ে যাতে ভারতীয় গরু প্রবেশ না করতে পারে সেজন্য বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি বিশেষ নিদের্শনা দেয়া হয়েছে।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সালাম কবির জানান, সব ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এরাতে হাট-বাজারগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নজরদারি অব্যহত রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Shares