চীনকে ঠেকাতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
চীনের সঙ্গে সাম্প্রতিক উত্তেজনাকে কেন্দ্র করে লাদাখ সীমান্তে সেনা উপস্থিতি জোরালো করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। চীনা সেনাদের ঠেকাতে তাদেরকে সবরকমের পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতাও দেওয়া হচ্ছে। সোমবার (৩১ আগস্ট) ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রকে উদ্ধৃত করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এসব তথ্য জানিয়েছে।
গত মে মাস থেকেই লাদাখে ভারত ও চীনের মধ্যে সীমান্ত সংঘাত জারি রয়েছে। গত ১৫ জুন তা চরমে ওঠে। পেট্রোলিং পয়েন্ট-১৪-এর কাছে দু’দেশের সেনার মধ্যে সংঘর্ষে প্রাণ হারান ভারতের ২০ জন সেনা। তার পর থেকে সীমান্তে শান্তি ফেরাতে সামরিক ও কূটনৈতিক স্তরে একাধিক বৈঠক হয়েছে। তবে চূড়ান্ত কোনও সমাধানে পৌঁছানো যায়নি। এরমধ্যেই ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, সীমান্তে চীনা সেনাদের আগ্রাসনের একটি প্রচেষ্টা থামিয়ে দিতে পেরেছে তারা।পাল্টা দাবিতে বেইজিং জানিয়েছে, তারা সীমান্তে কোনও আগ্রাসন প্রচেষ্টা চালায়নি। উল্টো ভারতীয় সেনার বিরুদ্ধে সীমান্ত পেরোনোর অভিযোগ তুলেছে প্রতিবেশী দেশ। এমন অবস্থায় সোমবার উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের আয়োজন করে ভারত।
বৈঠকের সভাপতি অজিত দোভালের কাছে পরিস্থিতির সারসংক্ষেপ বর্ণনা করেন জ্যেষ্ঠ সেনা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। সামনের মাসগুলোতে চীন কী কী পদক্ষেপ নিতে পারে তার একটি পর্যালোচনা উপস্থাপন করেন ইনটেলিজেন্স ব্যুরো-এর পরিচালক অরবিন্দ কুমার ও রিসার্স অ্যানালাইসিস উইং-এর সেক্রেটারি সামান্থ গোয়েল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভাল্লাও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এনডিটিভিকে বলেন, ‘ভারত চীনের প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিতে পেরেছে। তবে আসন্ন দিনগুলোতে আমরা কী ধরনের কৌশল গ্রহণ করব তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’ওই কর্মকর্তা জানান, আগামীতে প্রকৃত নিয়ন্ত্ররেখায় সেনা মোতায়েন বাড়াবে ভারত। আরেক কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় চীন একই ধরনের কৌশল গ্রহণ করতে পারে। সেকারণে আমাদেরকে প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে।’চীনা সেনাদের একতরফা আচরণ ঠেকাতে সবধরনের প্রচেষ্টা চালানোর জন্য ভারতীয় সেনাদেরকে স্পষ্টভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
প্যাংগংয়ে আটটি ফিঙ্গার পয়েন্ট আছে। ভারতের দাবি, ফিঙ্গার পয়েন্ট আট পর্যন্ত ভারতীয় ভূখণ্ড। চীনের দাবি, ফিঙ্গার পয়েন্ট পাঁচ পর্যন্ত চীনের অংশ। সেই বিতর্কের সমাধান এখনও হয়নি। দুই পক্ষই ওই অঞ্চলে পেট্রোলিং চালানোর চেষ্টা করছে। ওই অঞ্চলেই শনিবার রাত এবং রবিবার সকালে নতুন করে সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।