কলারোয়ায় সেঁজুতি হত্যার এক সপ্তাহ পর রহস্য উদঘাটন, আসামি গ্রেপ্তার
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: প্রেমের কারণে প্রেমিকের হাতেই হত্যা হয়েছে সাতক্ষীরা কলারোয়ার জালালাবাদ গ্রামের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া স্কুল ছাত্রী সানচিতা হোসেন সেঁজুতি (১৩)। হত্যার ৭ দিন পর হত্যার রহস্য সম্পর্কে আটক প্রেমিকের দেওয়া জবানবন্দির বরাতে পুলিশ এ তথ্য জানিয়েছে। এরআগে রবিবার (৩ এপ্রিল) রাতে প্রেমিক আব্দুর রহমান (২০)কে গ্রেপ্তার করে সাতক্ষীরার কলারোয়া থানা পুলিশ। কলারোয়া উপজেলা পৌরসদরের আফজালের মোড় এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই
সোহারব হোসেন। ঘাতক প্রেমিক আব্দুর রহমান একই গ্রামের পাশাপাশি বাসিন্দা আলতাফ হোসেনের ছেলে ও হাবিবুল ইসলাম কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী।
জালালাবাদ ইউপি সদস্য মশিয়ার রহমান বলেন, ছয় মাস আগে প্রেমের সম্পর্কের কারণে আব্দুর রহমান নামের ওই যুবকের সাথে পালিয়ে যায় সেঁজুতি। এ ঘটনায় মেয়ের পরিবার বাদী হয়ে থানা পুলিশের মাধ্যমে আপোষ মিমাংসা করে সেঁজুতিকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে রাখে। গত ২৮ তারিখ সকালে ড্রেনে উপুড় করা অবস্থায় সেঁজুতির মরদেহ পাওয়া গেছে এমন সংবাদ পেয়ে গ্রাম
পুলিশের মাধ্যমে থানা-পুলিশকে জানালে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে তদন্ত করেছে।’
কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ নাসির উদ্দীন মৃধা বলেন, পাশাপাশি বাড়ি হওয়ায় সেঁজুতির সাথে দীর্ঘদিনের গভীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল প্রতিবেশী আব্দুর রহমানের সাথে। আব্দুর রহমান জবানবন্দিতে হত্যার কথা স্বীকার করে বলেছে সেঁজুতির সাথে গভীর প্রেমের সম্পর্ক থাকলেও অন্য ছেলেদের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে সেঁজুতি। অন্য ছেলেদের সাথে সেঁজুতির প্রেমের এ বিষয়টা মানতে পারেনি তার প্রেমিক আব্দুর রহমান।
ঘটনার দিন সোমবার ২৭ তারিখ রাত ৯টার দিকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে দু’জনে। সেঁজুতির মেঝ দাদুর পরিত্যক্ত ঘরের মধ্যে পালিয়ে যাওয়ার পরামর্শের মধ্যে কোন একটি বিষয় নিয়ে তাদের মাঝে মনোমালিন্য দেখা দিলে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আব্দুর রহমান সেঁজুতিকে ধাক্কা দিলে দেওয়ালে পড়ে জ্ঞান হারায় সেঁজুতি। তাৎক্ষণিক জ্ঞান না ফেরায় ঘটনার ধামাচাপা দিতে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে সেঁজুতিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মাষ্টার পাড়ার মাঠে আলাউদ্দিন
সরদারের কুল বাগানের ড্রেনে সেজ্যোতির মৃতদেহ ফেলে রাখে।
কলারোয়া থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আরও বলেন, হত্যা করে মৃতদেহ গোপন করার অপরাধে ৩০২/৩৪/২০১ পেনাল কোড ১৮৬০ ধারার ৪৫ নম্বর অজ্ঞাত আসামি মামলায় জালালাবাদ মাষ্টার পাড়ার আলতাফ হোসেনের ছেলে আব্দুর রহমান (২০)কে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে আটক করা হয়েছে। তাকে মামলা আইনে সাতক্ষীরা জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আসামির ১৬৪ ধারার জবানবন্দি ও তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আলোচিত সেঁজুতির মৃতদেহ গত ২৮ মার্চ ভোর সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার জালালাবাদ মাষ্টারপাড়া গ্রামের আলাউদ্দিন সরদারের কুল বাগানের ড্রেন থেকে পুলিশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় সানচিতা হোসেন সেঁজুতির মা লায়লা পারভীন বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে কলারোয়া থানায় ৪৫ নম্বর হত্যা মামলা দায়ের করেন।