ইমরান খানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা স্থগিত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন (ইসিপি) ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) অবমাননার মামলায় দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে জারি করা জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা স্থগিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ওই মামলার অভিযোগ গঠন আগামী ২ আগস্ট পর্যন্ত স্থগিত করেছে ইসিপি।
মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) অবমাননার এই মামলায় প্রথমবারের মতো কমিশনে হাজির হন ইমরান খান। পরে পিটিআই প্রধানের উপস্থিতিতে শুনানি শেষে মামলার অভিযোগ গঠন ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা স্থগিত করে কমিশন।
গত সোমবার (২৪ জুলাই) ইমরান খানের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করে ইসিপি। একই সঙ্গে তাকে গ্রেফতারের পর নির্বাচন কমিশনে হাজির করতে পুলিশকে নির্দেশ দেয়া হয়।
পরোয়ানা জারির পর মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনে হাজির হন পিটিআইপ্রধান। পরে পিটিআই প্রধানের উপস্থিতিতে শুনানি শেষে মামলার অভিযোগ গঠন ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা স্থগিত করে কমিশন।
গত বছর দেশটির নির্বাচন কমিশন ও সিইসির বিরুদ্ধে অশালীন ভাষা ব্যবহারের অভিযোগে পিটিআই প্রধানসহ দলটির সাবেক মহাসচিব আসাদ উমর ও সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ফাওয়াদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে ইসিপি।
পরে ইসিপির সদস্য নিসার দুররানির নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনের বেঞ্চে হাজির হয়ে ইমরান খান ও অন্যদের অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা দেয়ার জন্য কয়েক দফায় নোটিশও পাঠানো হয়। কিন্তু পিটিআই নেতারা ইসিপির বেঞ্চে হাজির হননি। এর পরিবর্তে দেশটির উচ্চ আদালতে নির্বাচন আইন-২০১৭ এর ১০ ধারার আওতায় ইসিপির অবমাননার মামলা দায়েরের ক্ষমতা চ্যালেঞ্জ করেন পিটিআই নেতারা।
চলতি বছরের শুরুর দিকে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন ইমরান খান ও পিটিআইয়ের অন্য নেতাদের বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ইসিপিকে অনুমোদন দেয়। গত ২১ জুন নির্বাচন কমিশন ও সিইসিকে অবমাননার মামলায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। মামলার কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন পেলেও ইসিপিকে চূড়ান্ত রায় ঘোষণার ক্ষমতা দেয়নি দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।
কয়েক দফায় নোটিশ পাঠানো হলেও নির্বাচন কমিশনের গঠিত বিচারিক বেঞ্চের শুনানিতে ইমরান খান ও তার দলের নেতারা হাজির হননি। একইভাবে শুনানিতেও ইমরান খান, ফাওয়াদ চৌধুরী ও আসাদ উমরের কেউই ইসিপিতে উপস্থিত হননি। পরে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে এই মামলার কার্যক্রম আগামী ২৫ জুলাই পর্যন্ত মুলতবি ঘোষণা করে ইসিপি।
তবে গত ২০ জুলাই পিটিআইয়ের সাবেক নেতা ফাওয়াদ চৌধুরী তার বিরুদ্ধে নির্বাচনী সংস্থার দায়ের করা অবমাননার মামলায় ইসিপির কাছে ক্ষমা চান। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনকে নিয়ে তিনি যা বলেছিলেন তা দলের মুখপাত্র থাকাকালীন পিটিআইয়ের রাজনৈতিক অবস্থানের সাথে সম্পর্কিত।
উল্লেখ্য, গত বছর পাকিস্তানের পার্লামেন্টে আনা অনাস্থা প্রস্তাবে হেরে ক্ষমতাচ্যুত হন ইমরান খান। এরপর পিটিআইপ্রধান বিরুদ্ধে মোট ১৮০টি মামলা রয়েছে। ঘুষ গ্রহণের এক মামলায় গত মে মাসে তাকে গ্রেপ্তার করা হলে দেশজুড়ে সহিংস বিক্ষোভ হয়। ইমরান খান এখন জামিনে আছেন।